দিশাহীন ধ্রুবতারার দপ্তরে আপনাকে স্বাগত!

আমি এই মহাজগতের এক সামান্য প্রাণ, লক্ষ্যভ্রষ্ট জীবনসমুদ্রের নাবিক, বিভ্রান্ত জনতাকে জীবনের পথনির্দেশ দিয়ে থাকি। মানবজীবনের ধ্রুব সত্য অনুভবের চেষ্টায় ব্যক্তিজীবনের অব্যক্ত কথা নিয়ে এই সুবিশাল জালাধারে শব্দের জাল বুনি!

প্রথমেই জানিয়ে রাখি, সমস্ত লেখা সম্পূর্ণ মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্যে ও শখের খেয়ালের বসে সৃষ্ট। পাঠকবৃন্দের কোনওরকম অনুভব বা বিশ্বাসে আঘাত দেওয়া আমার অভিপ্রায় নয়। কাহিনীর চরিত্ররা সমস্তই কাল্পনিক এবং এর সাথে বাস্তবের মিল খোঁজা অর্থহীন এবং চরিত্রের বক্তব্য ও মতামত আমার ব্যক্তিগত মতামতের থেকে পৃথকীকৃত, এবং উভয়ের মিল বা অমিল খোঁজা অর্থহীন।


Thumbnail image

বিশ্ব

তৃতীয় বার বিড়িটা নিভে যেতেই ‘ধুত্তোর্‌’ বলে ছুঁড়ে ফেলল বিশে। সকাল সকাল ওকে দেখে পাড়ার হুব্বা মদন বিশ্রী হেসে একটা অশ্রাব্য মন্তব্য করে চলে গেলো, সেই থেকেই মেজাজটা চটকে আছে তার। তার উপর আসার সময় পেছন পেছন ঘুরছিল রিনা। কোনও শব্দ করেনি সে। কিন্তু তবুও মাথায় আগুন লেগে গেছিল। রাগের মাথায় চার কথা শুনিয়েছে সে। “কতবার বলেছি সামনে আসতে না। সরে থাকতে পারিস না এই তাড়ায়? আছিস কেন পড়ে এখানে? দূর হ’ পোড়ামুখি! যত্তসব!” মাথা নিচু করে দরজার সামনে থেকে সরে গেছে রিনা। তার সাথে বিশের কথা কাটাকাটি হয় না বললেই চলে। আসলে, কথা হলে তবে তো কথা কাটাকাটির প্রশ্ন!

বিস্তারিত
Thumbnail image

স্বপ্ন নাকি সত্যি

উফ্‌! কি গরম পড়েছে। ল্যাবে কেউ নেই, এখনও আসেনি। হাঁফাতে হাঁফাতে ল্যাবের এয়ার কন্ডিশনারটার দিকে তাকালাম। প্রশান্ত দা সম্ভবত মরুভূমির পাব্লিক, ২৮ এর নিচে নামলেই হুকুম আসে টেম্পারেচার বাড়ানোর। কিন্তু এই শীতে এত গরম লাগছে কেন? না, জানি কলকাতার আবহাওয়ার কোনও মা বাপ নেই, কিন্তু এত গরম লাগাটা তো অস্বাভাবিক। ল্যাবের সব থেকে জুনিয়র মেম্বার অক্ষয়। হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন, অবাঙালী অক্‌শয় নয়, পুরোদস্তুর বাঙালী, অক্ষয়। তার চিরাচরিত স্বভাব, ও সর্বকনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে দায়িত্বও বটে, ল্যাবের সমস্ত বোতলে জল ভরে রাখার। সেই আশায় উঠে অক্ষয়ের ডেস্কে গিয়ে দেখলাম পাঁচটা বোতল কানায় কানায় ভরে রাখা আছে। সেখান থেকে একটা জলের বোতল নিয়ে এসে নিজের ডেস্কে বসলাম। গলা শুকিয়ে কাঠ।

বিস্তারিত
Thumbnail image

শিরদাঁড়া

যেদিন দেখেছিলাম তোমায় তাকিয়ে,
ব্যারিকেডের ওই পারে,
জানি বিধাতা হেসে ফেলেছিল
তোমার বেয়নেটের ধারে।

বিস্তারিত
Thumbnail image

অৎ-ভুতুড়ে কথা

খুট করে একটা শব্দে ভেঙে গেল ঘুমটা। এমনিতেই আমার ঘুম বেশ পাতলা। পাশের খাটে অভীক দেখলাম গভীরভাবে ঘুমোচ্ছে। ঘড়িতে দেখলাম রাত তিনটে। উঠে চোখেমুখে জল দিয়ে শুলাম, কিন্তু ঘুম এল না। মিনিট দশেকের মধ্যেই আবার একবার শুনলাম আওয়াজটা। এবার বেশ জোরেই। অভীকেরও ঘুম ভেঙে গেছে। উঠে টর্চ নিয়ে চারিদিক দেখেও শব্দের কোনও কূলকিনারা খুঁজে পেলাম না। পরদিন সকালে বাড়িওয়ালাকে জানাতে তিনি বললেন, “বাবা, আমি তো আগেই বলেছিলাম। এখনও সময় আছে, অন্য বাসা খুঁজে নাও তোমরা।”

বিস্তারিত
Thumbnail image

তেল

“দাদা আমি এসে গেছি… আপনাদের আর কোনও চিন্তা নেই…” ভিড় ট্রেনের কামরায় এরকম আশ্বাসবাণী স্বয়ং বিবেকানন্দ শোনাতে পারতেন কিনা জানি না, তবে এহেন বাণী লোকের মনে আশ্বাস না হোক কৌতূহল যে জাগ্রত করবেই, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। উৎসুক চোখে তাকালাম ভদ্রলোকের দিকে, একা নই, অনেকেই তাকালেন কামরার। পরনে একটা জিন্‌স আর আধময়লা ফতুয়া, কাঁধে ঝোলানো একটা শান্তিনিকেতনী ব্যাগ, যদিও সেটাকে ব্যাগ না বলে ঝোলা বলা ভালো। ফতুয়ার পকেট থেকে একটা কালচে শিশি বার করে আবার বলা শুরু করলেন।

বিস্তারিত
Thumbnail image

অভিশপ্ত কলম

অনেকক্ষণ একটানা বসে থেকে মাথা ধরে গেছে। অনেক কষ্টে অফিসের কাজ শেষ হল। ঘড়ি বলছে সন্ধ্যে ৬টা। এখন এক কাপ চা না হলে আর চলছে না। তাড়াতাড়ি ডেস্কটপটা বন্ধ করে কেয়ারটেকার ছেলেটিকে বিদায় জানিয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে এসে ফুটপাথে দাঁড়ালো অনীক। রাস্তা পেরিয়ে উলটো দিকের ফুটপাথের চায়ের দোকানের বেঞ্চে গিয়ে বসল সে। “নবীনদা, একটা কড়া করে লিকার” পরিচিত গলায় ডাক শোনার সাথে সাথেই চা হাজির হয়ে গেল। ব্যস্ত কোলকাতার জনজীবনের এক চলন্ত ছবি অনীকের সামনে ফুটে উঠেছে। সেদিকে তাকিয়েই সে ভাবল, আজ সুদেশের কাছে আড্ডা মারলে কেমন হয়!

বিস্তারিত
Thumbnail image

মই

আনমনেই হাঁটছিলাম রাস্তা দিয়ে। পাড়ার গলি রাস্তা, তাই গাড়ির সংখ্যা কম। ঘন্টা তিনেক হল কারেন্ট নেই। শীতে পাখার দরকার নেই, তাই গরমে ঘুম হবে না, এরকম সমস্যাও নেই। কিন্তু বিকেলের মুখে বিদ্যুৎ না থাকা বেশ সমস্যাকর। আলোর অভাবে অনেক কাজই বন্ধ পড়ে থাকে। হাঁটতে হাঁটতে পাড়ার মোড়ে এসে পৌঁছলাম যেখানে ট্রান্সফর্মার লাগানো আছে। বিকেলের আবছা আলোয় চোখে এল দু’জন লোক মই নিয়ে ট্রান্সফর্মারে উঠে কাজ করছে। মইয়ের ওপরে যে রয়েছে, তাঁর চেহারা বাঁটুল দি গ্রেটের থেকে কোনও অংশে কম না। পার্থক্য একটাই, বুকটা পেটে আর পেটটা বুকে!

বিস্তারিত
Thumbnail image

শুধু সুমনের জন্য

অফিস যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিল সুমন। একঘেয়ে জীবন তার, ৯টা-৫টার অফিস তার নিত্য সঙ্গী। তার উপর থাকে ওভারটাইম। রবিবার ছুটি, কিন্তু বাড়ির কাজ তো আর কিছু কম থাকে না! বাবা গত হয়েছেন কিছুদিন হল। মা চলে গেছেন আরও আগে, তার ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করার আগেই। সেও প্রায় ৩ বছর হল। বি টেক কমপ্লিট করে ক্যাম্পাসিং এই ভালো আই টি কোম্পানী তে চাকরি পায় সুমন। বাবা খুশী হয়েছিলেন খুব। চিন্তিতও ছিলেন সুমনের বিয়ের কথা ভেবে। কিন্তু সে তো এসব বিয়ে টিয়ে ভাবেও নি।

বিস্তারিত
Thumbnail image

কিশোর কালে যা হয়

প্রীতম এর ক্লাস ১২। সামনে উচ্চমাধ্যমিক। পড়ার চাপ অনেক। মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে। “এতদিন শুধু ঘুরে আড্ডা মেরে কাটিয়ে দেওয়া গেছে, এখন পড়া ছাড়া গতি নেই।” কিন্তু মন মানতে চায় না। পড়তে আর ইচ্ছে ও করে না। একবার পুজোতে পাওয়া নতুন মোবাইল টার স্ক্রীন টা আনলক করে দেখলো প্রীতম। নাহ্, কোনও পেন্ডিং এসএমএস বা মিসড কল নেই। প্রিয়ারও না। মায়ের বকুনির চোটে সারাদিন সাইলেন্ট মোডেই দিয়ে রাখতে হয় ফোন টাকে। ভাবলো একবার প্রিয়া কে ফোন করবে।

বিস্তারিত
Thumbnail image

যমরাজের সাক্ষাৎকার

যমরাজ তখন সবে খেতে বসেছেন। বাইরে শোরগোল শোনা গেল। চিত্রগুপ্ত হন্তদন্ত হয়ে ঢুকে বলল, “মহারাজ, সর্বনাশ হয়েছে!” বিরক্ত যমরাজ মাংসের হাড় মুখে নিয়েই বললেন, “তোমার তো রোজই কিছু না কিছু সর্বনাশ হয়। ঝামেলা না পাকিয়ে খেতে দাও তো!” বাইরে শোরগোল বেড়েই চলেছে। হঠাৎ বিচিত্রগুপ্তের হাউমাউ চিৎকার শোনা গেল, “হায় প্রভু! একি সর্বনাশ হল!” যমরাজ তখনও জানেন না কি হয়েছে। চিত্রগুপ্ত চেঁচিয়ে বলতে লাগল, “রাজামশাই, কোথাকার দু’টো উজবুক যমদূত দু’জন জ্যান্ত মানুষকে ধরে এনেছে।” যমরাজের মুখ থেকে মাংসের হাড় খসে পড়লো। “এতো উজবুক গাধাদের দল নিয়ে আমি মরতে কেন যে লাশ নিয়ে ব্যাবসা শুরু করলাম!

বিস্তারিত